SSC Physics Chapter 11: চল বিদ্যুৎ (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)
অধ্যায়-১১: চল বিদ্যুৎ (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)
১। প্রঃ আপেক্ষিক রোধ বা রোধকত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো
পরিবাহীর রোধকে ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বা রোধকত্ব বলে। নির্দিষ্ট
তাপমাত্রায় L দৈর্ঘ্য ও A প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট একটি পরিবাহীর রোধ যদি R হয় তবে,
২। প্রঃ রুপার অপেক্ষিক রোধ 1.6×
উত্তরঃ রুপার আপেক্ষিক রোধ 1.6×
৩। প্রঃ ভূসংযোগ তার নিম্ন রোধের হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভূসংযোগ তার নিম্ন রোধবিশিষ্ট হয়।কোনো কারণে বর্তনী ত্রুটিযুক্ত
হলে যাতে অতিরিক্ত তড়িৎ প্রবাহ খুব সহজে ভূমিতে চলে যেতে পারে।অর্থাৎ ত্রুটিপূর্ণ বর্তনীতে
উচ্চমানের তড়িৎ প্রবাহ ভূমিতে চলে যেতে যাতে কম বাধার সন্মুখীন হয়।সে কারণে ভুসংযোগ
তারের রোধ কম হওয়া উচিত।
৪। প্রঃ সিস্টেম লস কীভাবে কমানো যায়?
উত্তরঃ বিদ্যুৎ
কেন্দ্রে উৎপাদিত নিম্ন ভোল্টেজের বিদ্যুৎ শক্তিকে উচ্চধাপী ট্রান্সফরমারের সাহায্যে
উচ্চ ভোল্টেজে পরিণত করে সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হয়। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য যে
সব পরিবাহী তার ব্যব্যহার করা হয় তাদের রোধ নির্দিষ্ট থাকে। ফলে এই রোধকে অতিক্রম
করার জন্য তড়িৎশক্তির একটি অংশ তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ শক্তির ক্ষয় বা
লস হয়। এই লসই হলো তড়িতের সিস্টেম লস। যদি উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয় তখন
বিদ্যুৎ গ্রিড তথা পরিবাহীর রোধের কারণে যে লস হয় তা অনেকাংশে কমে যায়। একটি
নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তির জন্য, উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে তড়িৎ
প্রবাহের মান কম হয়। এর ফলে রোধজনিত লসের পরিমাণও কমে যায়। অতএব, সঞ্চালন লাইনের
ভোল্টেজকে বৃদ্ধি করে তড়িতের সিস্টেম লস কমানো যেতে পারে।
৫। প্রঃ একটি তামার তারকে সুষমভাবে টেনে লম্বা করা হলে রোধের পরিবর্তন ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ একটি তামার
তারকে সুষমভাবে টেনে লম্বা করা হলে রোধের পরিবর্তন হয়।
নির্দিষ্ট
পরিবাহকের রোধ পরিবাহকের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের উপর নির্ভর করে।পরিবাহকের
দৈর্ঘ্য বেশি হলে রোধ বেশি হয় এবং দৈর্ঘ্য কম হলে রোধও কম হয়।অন্যদিকে প্রস্থচ্ছেদের
ক্ষেত্রফল বেশি হলে রোধ কম হয় এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল কম হলে রোধ বেশি হয়।যেহেতু
তামার তারকে সুষমভাবে টেনের লম্বা করা হলে এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে রোধও বৃদ্ধি
পাবে।আবার তারের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল কমে যাবে এবং রোধ বৃদ্ধি
পাবে।অর্থাৎ মোটা তারের তুলনায় চিকন তারের রোধ বেশি।অতএব তামার তারকে সুষমভাবে টেনে
লম্বা করা হলে এর রোধ বৃদ্ধি পাবে।
৬। প্রঃ পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদ ও রোধ কীভাবে সম্পর্কিত ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ রোধের সূত্র থেকে আমরা জানি যে, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবাহীর দৈর্ঘ্য স্থির থাকলে পরিবাহীর রোধ এর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক।
সূত্র থেকে দেখা যায় যে,কোনো পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি পেলে রোধ কমে এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল হ্রাস পেলে রোধ বৃদ্ধি পায়।
৭। প্রঃ সরু তারের চেয়ে মোটা তারে বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় কেন?
উত্তরঃ রোধের প্রস্থচ্ছেদের সূত্রানুসারে, নির্দিষ্ট
তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবাহীর দৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীর রোধ এর
প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক পরিবর্তিত হয়।
সূত্র থেকে দেখা যায় যে,কোনো পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি পেলে অর্থাৎ তার মোটা হলে রোধ কমে এবং তড়িৎ প্রবাহ বেশি হয়। পক্ষান্তরে, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল হ্রাস পেলে অর্থাৎ তার চিকন হলে রোধ বৃদ্ধি পায় এবং তড়িৎ প্রবাহ কমে।এ কারণে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একই উপাদানের সরু তার অপেক্ষা মোটা তারের মধ্য দিয়ে বেশি তড়িৎ প্রবাহিত হয়।
৮। প্রঃ ওহমেরর সূত্রটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ওহমের সূত্রটি হলো-“নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো পরিবাহীর মধ্য
দিয়ে যে তড়িৎ প্রবাহিত হয় তা ঐ পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক।”
মনে করি, AB একটি পরিবাহী তার। এর দুই প্রান্তের বিভব যথাক্রমে VA এবং VB ।যদি VA > VB হয়, তবে পরিবাহীর দুই প্রন্তের বিভব পার্থক্য V = VA -VB এবং A প্রান্ত থেকে B প্রান্তের দিকে তড়িৎ প্রবাহ চলে।
এই সূত্রানুসারে,পরিবাহীর
দুই প্রন্তের বিভব পার্থক্য দ্বিগুণ করা হলে,পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহ
দ্বিগুণ হবে।আবার,যদি পরিবাহীর দুই প্রন্তের বিভব পার্থক্য অর্ধেক করা হয়,তবে তড়িৎ
প্রবাহও অর্ধেক হবে।
৯। প্রঃ তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে পরিবাহী রোধ বৃদ্ধি পায় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কোনো পরিবাহকের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল স্থির
থাকলে পরিবাহিতার মান নির্ভর করে পরিবাহীর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর।ধাতুসমূহে মুক্ত
ইলেকট্রন থাকে বলে সকল ধাতুই উত্তম পরিবাহক
অর্থাৎ ধাতব পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা বেশি।তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে সকল পরিবাহকেরই পরিবাহিতা
হ্রাস পায়।কারণ,পরিবাহিতা ও রোধ পরস্পর বিপরীত রাশি।অর্থাৎ পরিবাহিতা হ্রাস পেলে রোধ
বৃদ্ধি পায়।তাছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে পরিবাহীর মুক্ত ইলেকট্রনগুলো উত্তেজিত হয়ে
গতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।ফলে তড়িৎ প্রবাহ চলার সময় বাধার সৃষ্টি হয়
এবং রোধ বৃদ্ধি পায়।
১০। প্রঃ তড়িৎ বর্তনীতে সার্কিট ব্রেকারের ভূমিকা কী?
উত্তরঃ নিরাপত্তামূলক কৌশল হিসেবে সার্কিট ব্রেকারের গুরুত্ব অপরিসীম।এটি
তড়িৎ সরবরাহ বন্ধ করে বৈদ্যুতিক সামগ্রিকে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে।এটি সাধারণত বাড়ির
সন্মুখে দরজার পাশে স্থাপন করা হয়।যখন কোনো বর্তনীতে নির্দিষ্ট মানের অধিক তড়িৎ প্রবাহিত
হয় তখন সার্কিট ব্রেকার বর্তনীত তড়িৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।সার্কিট ব্রেকার বাড়ির কোনো
নির্দিষ্ট অংশের তড়িৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে।বর্তনীতে সার্কিট ব্রেকার না থাকলে অতিরিক্ত
তড়িৎ প্রবাহের জন্য বাড়ির তড়িৎ সরঞ্জাম বিনষ্ট হতে পারে,এমনকি অগ্নিকান্ডও ঘটতে পারে।এই
জন্য সার্কিট ব্রেকার নিরাপত্তামূলক কৌশল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১১। প্রঃ অ্যামিটার এবং ভোল্টমিটারের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ অ্যামিটার
এবং ভোল্টমিটারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ
অ্যামিটার |
ভোল্টমিটার |
১।অ্যামিটারের সাহায্যে তড়িৎ প্রবাহ সরাসরি অ্যাম্পিয়ার এককে
পরিমাপ করা হয়। |
১। ভোল্টমিটারের সাহায্যে দু’টি বিন্দুর মধ্যকার বিভব
পার্থক্য সরাসরি ভোল্ট এককে পরিমাপ করা হয়। |
২।এটি স্বল্প রোধবিশিষ্ট
হয়ে থাকে। |
২।এটি উচ্চ রোধবিশিষ্ট
হয়ে থাকে। |
৩।এটি বর্তনীতে
শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত থাকে। |
৩।এটি বর্তনীতে
সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত থাকে। |
৪। বর্তনীর সম্পূর্ণ
তড়িৎ প্রবাহ এর মধ্য দিয়ে চলে। |
৪। বর্তনীর খুব
সামান্য তড়িৎ প্রবাহ এর মধ্য দিয়ে চলে। |
১২। প্রঃ একটি বাতির গায়ে 220 V – 32 W লেখা আছে; এর অর্থ কী?
উত্তরঃ একটি বাতির গায়ে 220 V – 32 W লেখার অর্থ হলো-
বাতিটিকে 220 V বিভব পার্থক্যে সংযুক্ত করলে বাতিটি সবচেয়ে বেশি আলো দিবে এবং প্রতি সেকেন্ডে 32 জুল বৈদ্যুতিক শক্তি তাপ শক্তি ও আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হবে।
১৩। প্রঃ বৈদ্যুতিক হিটারে নাইক্রোম ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তরঃ আমরা জানি, যেসব পদার্থের আপেক্ষিক রোধের মান বেশি তাদের
মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের সময় বেশি তাপ উৎপন্ন হয়।নাইক্রোম তারের আপেক্ষিক রোধ
100×
১৪। প্রঃ পরিবাহকত্ব ও রোধকত্ব এর মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ পরিবাহকত্ব ও
রোধকত্ব এর মধ্যে পার্থক্য
নিম্নরূপঃ
পরিবাহকত্ব
|
রোধকত্ব |
১। আপেক্ষিক রোধের
বিপরীত রাশিকে পরিবাহকত্ব
বলে। |
২। কোনো নির্দিষ্ট
তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর রোধকে
ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর রোধকত্ব বলে। |
২।পরিবাহকত্বকে
ϭ দ্বারা
প্রকাশ করা হয়। |
৩।রোধকত্বকে ρ
দ্বারা প্রকাশ করা হয়। |
৩।এর একক (Ωm)^-1 |
৩। এর একক (Ωm) |
কোন মন্তব্য নেই