Header Ads

Header ADS

SSC Chemistry Chapter 2: পদার্থের অবস্থা (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

             অধ্যায়-২:পদার্থের অবস্থা (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

১। প্রঃ মোমবাতি প্রজ্জ্বলনকালে ভৌত ও রাসায়নিক উভয় পরিবর্তন ঘটে – ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ মোমবাতির প্রধান উপাদান বিভিন্ন হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ। মোম জ্বালালে এর কিছু অংশ গলে কঠিন অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্তরিত হয় এবং ঠান্ডা হয়ে আবার কঠিন অবস্থায় পরিণত হয়। এটা হলো ভৌত পরিবর্তন। মোম গলার সাথে সাথে কিছু অংশ বায়ুর অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই-অক্সাইড, জলীয় বাষ্প, অলো এবং তাপশক্তি  উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন পদার্থ সৃষ্টি হওয়ায় এটি একটি রাসায়নিক পরিবর্তন। কাজেই মোমবাতি প্রজ্জ্বলনকালে ভৌত ও রাসায়নিক উভয় পরিবর্তন সংঘটিত হয়।

২। প্রঃ পানি থেকে তাপ সরিয়ে নিলে কোন পরিবর্তন ঘটে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ পানি থেকে তাপ সরিয়ে নিলে পানি বরফে পরিণত হয় এবং এটি একটি ভৌত পরিবর্তন। এখনে শুধু অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। পানি থেকে শীতলীকরণের মাধ্যমে তাপ অপসারণ করলে 00 C তাপমাত্রায় পানি বরফে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে পানি তরল অবস্থা থেকে কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয়, ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয় না। উভয় অবস্থাই পানির গঠন একই থাকে। তরল অবস্থায় পানির অণুসমূহের আন্তঃআনবিক আকর্ষণ বল কম, বরফের মধ্যে পানির অণুসমূহের আন্তঃআনবিক আকর্ষণ বল বেশি বলে এটি কঠিন। তাই পানি থেকে তাপ অপসারণ করলে পানি জমে বরফ হয় এবং এটি  ভৌত পরিবর্তন।


৩। প্রঃ একই পদার্থের গলনাংক ও স্ফুটনাংক ভিন্ন কেন?

উত্তরঃ আমরা জানি, স্বাভাবিক চাপে (1 atm) যে তাপমাত্রায় কোনো কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে ঐ পদার্থের গলনাংক বলে। আবার, স্বাভাবিক চাপে (1 atm) কোনো তরল পদার্থ যে তাপমাত্রায় গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাই হলো ঐ পদার্থের স্ফুটনাংক। কোনো একটি কঠিন পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করলে কণাগুলো তাপশক্তি গ্রহণ করে কাঁপতে থাকে এবং এক সময় কম্পন বৃদ্ধি পেয়ে গতিশক্তি প্রাপ্ত হয়। আর যখন এই গতিশক্তি কণাসমূহের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি অপেক্ষা কিছুটা বেশি হয় তখনই কঠিন পদার্থ গলতে থাকে এবং তরল অবস্থায় পরিণত হয়। এই অবস্থায় আরো তাপ প্রয়োগ করা হলে গতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং এক সময় গতিশক্তি এত বেড়ে যায় যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তিকে উপেক্ষা করে প্রায় মুক্ত হয়ে কণাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছুটাছুটি করে। অর্থাৎ এ অবস্থায় তরল পদার্থ ফুটতে থাকে ও গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হয়। যেহেতু কোনো কঠিন পদার্থে তাপ প্রয়োগ করলে প্রথমে গলে ও পরে ফুটতে থাকে। তাই একই পদার্থের গলনাংক ও স্ফুটনাংক ভিন্ন হয়। 


৪। প্রঃ কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রে কণার গতিতত্ত্ব  ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি এবং কণাগুলোর গতিশক্তি দ্বারা পদার্থের কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থা ব্যাখ্যা করার তত্ত্বকেই কণার গতিতত্ত্ব বলে। আমরা জানি, কঠিন পদার্থের কণাসমূহের মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি খুব বেশি থাকে এবং কণাগুলো খুব কাছাকাছি স্থির আবস্থায় থাকে।  কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করলে কণাগুলো তাপশক্তি গ্রহণ করে কাঁপতে থাকে এবং এক সময় কম্পন বৃদ্ধি পেয়ে গতিশক্তি প্রাপ্ত হয়। তখন কণাসমূহের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি কমতে থাকে এবং গতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। যখন আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি অপেক্ষা কণাসমূহের গতিশক্তি কিছুটা বৃদ্ধি পায় তখনই কঠিন পদার্থ গলতে শুরু করে এবং তরল অবস্থায় পরিণত হয়।


৫। প্রঃ আয়োডিনকে তাপ দিলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় কেন?

উত্তরঃ যে সব কঠিন পদার্থকে উত্তপ্ত করলে তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় তাদেরকে ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ। আয়োডিন একটি ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ। আয়োডিনকে তাপ প্রয়োগ করলে আয়োডিন অণুগুলো তাপশক্তি গ্রহণ করে কাঁপতে থাকে এবং এক সময় কম্পন বৃদ্ধি পেয়ে গতিশক্তি প্রাপ্ত হয়। অণুসমূহের এই গতিশক্তি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং আন্তঃআনবিক আকর্ষণ খুব দ্রুত হ্রাস পায়। এ কারণে আয়োডিনকে তাপ প্রয়োগ করলে এটি তরল না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।


৬। প্রঃ কর্পূরকে তাপ দিলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় কেন?

উত্তরঃ যে সব কঠিন পদার্থকে উত্তপ্ত করলে তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় তাদেরকে ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ। কর্পূর একটি ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ। তাই একে তাপ প্রদান করলে এটি তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।


৭। প্রঃ নিশাদলকে তাপ প্রয়োগ করলে কোন পরিবর্তন ঘটে? ব্যাখ্যা কর। 

উত্তরঃ নিশাদলকে তাপ প্রয়োগ করলে ভৌত পরিবর্তন ঘটে। কারণ নিশাদল একটি ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ। একে তাপ দিলে এটি তরলে রূপান্তরিত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে নিশাদল কঠিন অবস্থা থেকে সরাসরি গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হয়, অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে শুধু অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। কোনো ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থ সৃষ্টি হয় না। অতএব, নিশাদলকে তাপ প্রয়োগ করলে শুধু ভৌত পরিবর্তন ঘটে। 


৮। প্রঃ ব্যাপন ও নিঃসরণ এর মধ্যে পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে পার্থক্য নিম্নে প্রধান করা হলোঃ 

          ব্যাপন

            নিঃসরণ

১। ব্যাপন হলো সাধারণ বায়ুমন্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থ স্বতঃস্ফূর্ত ও সমভাবে পরিব্যাপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়া।

নিঃসরণ হলো উচ্চচাপের স্থান থেকে নিম্নচাপের স্থানের দিকে সরু ছিদ্রপথে সজোরে গ্যাসীয় পদার্থ বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া। 

২।এ প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। 

২।কেবল গ্যাসীয় পদার্থ সরু ছিদ্রপথে সজোরে বেরিয়ে আসে।

৩।এটি দীর্ঘ্য সময় স্থায়ী হয়।

৩।এটি স্বল্প সময় স্থায়ী হয়।

৯। প্রঃ বডি স্প্রেতে ব্যাপন বা নিঃসরণ কোনটি আগে ঘটে? 

উত্তরঃ বডি স্প্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাপন ও নিঃসরণ উভয় প্রক্রিয়াই ঘটে থাকে। তবে নিঃসরণ আগে ঘটে, পরে ব্যাপন ঘটে। বডি স্প্রেতে চাপ দিলে উচ্চচাপের স্থান থেকে (ভেতর থেকে)নিম্নচাপের স্থানের দিকে (বাইরের দিকে)সরু ছিদ্রপথে সজোরে এটি বেরিয়ে আসে। এটি হলো নিঃসরণ প্রক্রিয়া।বাইরে আসার পর এটি আবার স্বাভাবিক চাপে স্বতঃস্ফূর্ত ও সমভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।এটি হলো ব্যাপন প্রক্রিয়া।সুতরাং বডি স্প্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগে নিঃসরণ ও পরে ব্যাপন ঘটে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.