Header Ads

Header ADS

SSC Physics Chapter 4 :কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

  অধ্যায়-৪:কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

১। প্রঃ শক্তি ও কাজের একক অভিন্ন কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থকে শক্তি বলে। কাজ করার সামর্থ বলতে বুঝায় শক্তিকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তর করা। এ ক্ষেত্রে কৃত কাজ ও রূপান্তরিত শক্তি পরিমাণ সমান। এর অর্থ হচ্ছে বস্তুটি সর্বমোট যে পরিমাণ কাজ করতে পারে তাই হচ্ছে শক্তি। যেহেতু কোনো বস্তুর শক্তির পরিমাপ করা হয় তার দ্বারা সম্পাদিত কাজ দ্বারা। সুতরাং কাজ ও শক্তির একক একই এবং তা হলো জুল (J)। 

২। প্রঃ 50 J বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ 50 J বলতে বুঝায়-50 N বল প্রয়োগের ফলে বলের দিকে বলের প্রয়োগ বিন্দুকে 1 m সরাতে যে পরিমাণ কাজ সম্পাদিত হয় তা বুঝায়।

অথবা, 1 N বল প্রয়োগের ফলে বলের দিকে বলের প্রয়োগ বিন্দুকে 50 m সরাতে যে পরিমাণ কাজ সম্পাদিত হয় তা বুঝায়। 

৩। প্রঃ গতিশীল বস্তুর অর্জিত গতিশক্তি বেগের সাথে কীভাবে সম্পর্কিত?

উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তু গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ লাভ করে তাকে গতি শক্তি বলে।

৪। প্রঃ নির্দিষ্ট ভরের কোনো বস্তুর গতিশক্তি বেগের বর্গের সমানুপাতে পরিবর্তিত হয়-ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তু গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ লাভ করে তাকে গতি শক্তি বলে।

৫। প্রঃ ধনুকের রশি টেনে তীর ছোঁড়ার সময় কীভাবে শক্তিরূপান্তর ঘটে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ধনুকের রশি টানা হলে ধনুক তার স্বাভাবিক অবস্থা থেকে বিকৃত হয়ে পরিবর্তিত অবস্থায় উপনীত হয়। এ অবস্থায় ধনুকের মধ্যে বিভব শক্তি সঞ্চিত হয় এবং এটি কাজ করার সামর্থ অর্জন করে। ধনুকের এই বিভব শক্তিই তীর ছোঁড়ার সময় গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এভাবেই ধনুকের রশি টেনে ছোঁড়ার সময় শক্তির রূপান্তর ঘটে।  

৬। প্রঃ গতিশক্তি ঋণাত্মক হতে পারে কি-না ? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তু গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ লাভ করে তাকে গতি শক্তি বলে।

এই সমীকরণে বস্তুর ভর m সর্বদা নির্দিষ্ট ও ধনাত্মক এবং বেগ v পরিবর্তনশীল ও ধনাত্মক বা ঋণাত্মক যে কোনোটিই হতে পারে। কিন্তু বেগের বর্গ সব সময়ই ধনাত্মক হবে। তাই গতিশক্তিও সবদা ধনাত্মক হবে, কখনও ঋণাত্মক হতে পারে না।   

৭। প্রঃ কোনো বস্তুর বিভবশক্তি 60 J বলতে কী বুঝায়? 

উত্তরঃ কোনো বস্তুর বিভব শক্তি 60 J বলতে বুঝায় যে, বস্তুটির স্বভাবিক অবস্থা বা অবস্থান পরিবর্তন করে অন্য কোনো অবস্থায় বা অবস্থানে আনলে তা 60 J কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করে।

৮। প্রঃ ১ অশ্ব ক্ষমতা বলতে কী বুঝায়? 

উত্তরঃ অশ্ব ক্ষমতা হলো ক্ষমতার ব্যবহারিক একক । প্রতি সেকেন্ডে কোনো যন্ত্র 746 J কাজ করার ক্ষমতাকে এক অশ্ব ক্ষমতা (HP) বলে।

অর্থাৎ  1 HP = 746 Js^-1 = 746 watt (w)

৯। প্রঃ কোনো যন্ত্রের গতিশক্তি 300 J  কী বুঝায়?

উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ লাভ করে তাকে গতি শক্তি বলে। কোনো যন্ত্রের গতিশক্তি 300 J বলতে বুঝায় –যন্ত্রটি গতিশীল অবস্থায় তার গতির জন্য 300 J কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করে।   

১০। প্রঃ বিভব শক্তি বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ স্বাভাবিক অবস্থা বা অবস্থান পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য কোনো অবস্থায় বা অবস্থানে  আনলে বস্তুটি কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে।

m ভরের কোনো বস্তুকে ভূ-পৃষ্ট থেক h উচ্চতায় উঠাতে কৃত কাজই হলো ঐ বস্তুতে সঞ্চিত বিভব শক্তি। অর্থাৎ বিভব শক্তি =  mgh    .

১১। প্রঃ বিভব শক্তি কীসের উপর নির্ভর করে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ স্বাভাবিক অবস্থা বা অবস্থান পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য কোনো অবস্থায় বা অবস্থানে আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে। m ভরের কোনো বস্তুকে ভূ-পৃষ্ট থেক h উচ্চতায় উঠাতে কৃত কাজই হলো ঐ বস্তুতে সঞ্চিত বিভব শক্তি।

সুতরাং বিভব শক্তি = mgh 

বা, বিভব শক্তি = ভর x অভিকর্ষজ ত্বরণ x  উচ্চতা

সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, ভর ও উচ্চতা যত বেশি বিভব শক্তি তত বেশি। অতএব, আমরা বলতে পারি, বিভব শক্তি বস্তুর ভর ও উচ্চতার উপর নির্ভর করে।    

১২। প্রঃ বল প্রয়োগ করলে সকল ক্ষেত্রে সমান কাজ হয় না কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে যদি বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ ঘটে তবে সেই বল দ্বারা কাজ হয়েছে বুঝায়। বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল ও ঐ বলের অভিমুখে বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণের গুণফল দ্বারা কাজের পরিমাপ করা হয়।

অর্থাৎ কাজ = প্রযুক্ত বল বলের অভিমুখে প্রয়োগ বিন্দুর সরণ

     বা,  W = Fs

আবার যদি বস্তুর সরণ বলের অভিমুখে না হয়ে বলের অভিমুখের সাথে θ কোণে হয় তাহলে,

কাজ = প্রযুক্ত বল x বলের দিকে সরণের উপাংশ

বা,  F = Fs cos θ

এখন θ কোণের মানের ভিন্নতার কারণে কাজের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হবে।  

আবার যদি বল প্রয়োগ করলেও যদি সরণ না ঘটে সেই ক্ষেত্রে কাজ শূন্য হবে।

তাই বল প্রয়োগ করলে সকল ক্ষেত্রে সমান কাজ হয় না। 

১৩। প্রঃ বলের বিরুদ্ধে কাজ বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর। 

উত্তরঃ বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের বিপরীত দিকে বস্তুর সরণ ঘটে তবে সেই কাজকে বলের বিরুদ্ধে কাজ বলে। ধরা যাক একটি গতিশীল বস্তু আমার দিকে এগিয়ে আসছে, তা দেখে আমি F বল প্রয়োগ করে এটিকে থামানোর চেষ্টা করলে বস্তুটি আমাকে ঠেলে x মিটার পেছনে নিয়ে গেল। এক্ষেত্রে অতিক্রান্ত দূরত্ব বা সরণ বলের দিকে নয়, বলের বিপরীত দিকে, কাজেই কাজের পরিমাণ w = F(-x) = -Fx

অর্থাৎ কাজটি ঋণাত্মক। সুতরাং এ ধরণের কাজই হলো বলের বিরুদ্ধে কাজ। 

১৪। প্রঃ একই দূরত্ব সামনে না হেঁটে সিঁড়ি দিয়ে উঠলে বেশি ক্ষমতার প্রয়োজন হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ একই দূরত্ব সামনে বা সমতলে না হেঁটে সিঁড়ি দিয়ে উঠলে বেশি ক্ষমতার প্রয়োজন। কারণ সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়। সামনে বা সমতলে হাঁটার সময় ওজনের একটি উপাংশের সমান বল প্রয়োগ করতে হয়, আর সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় পুরো ওজনের সমান বল প্রয়োগ করতে হয়। অর্থাৎ সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় সামনে (সমতলে) হাঁটার চেয়ে অনেক বেশি বল প্রয়োগ করতে হয়,ফলে কাজের পরিমাণ বেশি হয়। এজন্য ক্ষমতাও বেশি হয়।    

১৫। প্রঃ কোনো যন্ত্রের কর্মদক্ষতা 60 % বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ একটি যন্ত্রের কর্মদক্ষতা 60% বলতে বুঝায় যে, যন্ত্রটিতে 100 J শক্তি প্রদান করলে তা থেকে 60 J শক্তি পাই, অর্থাৎ 60 J শক্তি কাজে পরিণত হয়। বাকী 40 J শক্তি অপচয় হয়।

১৬। প্রঃ সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠা কোন ধরণের কাজ-ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠা বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ। যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের দিকে না সরে বলের বিপরীত দিকে সরে যায়, তবে সেই বলকে বলের বিরুদ্ধে কাজ বলে। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার সময় অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়। কারণ অভিকর্ষ বল পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে ক্রিয়াশীল। এ কারণে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার সময় সরণ ঘটে অভিকর্ষ বলের বিপরীতে। তাই সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠা বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ।

১৭। প্রঃ লভ্য কার্যকর শক্তি কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করে কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি অনুসারে কোনো ইঞ্জিন থেকে সেই পরিমাণ শক্তি পাওয়া উচিত যে পরিমাণ শক্তি ইঞ্জিনে প্রদত্ত হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, যে পরিমাণ শক্তি ইঞ্জিনে প্রদান করা হয় তার চেয়ে কম পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায়। এটি প্রধানত এই কারণে হয় যে,ইঞ্জিনে ঘর্ষণ বলের বিরুদ্ধে যে কাজ করতে হয়, তা তাপ শক্তিরূপে অপচয় হয়। ইঞ্জিন থেকে যে পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায় তাকে লভ্য কার্যকর শক্তি বলে। অর্থাৎ লভ্য কার্যকর শক্তি = প্রদত্ত শক্তি – শক্তির অপচয়

আবার কর্মদক্ষতা বলতে বুঝায়, যন্ত্রে প্রদত্ত শক্তির যত অংশ কার্যকর শক্তি হিসেবে পাওয়া যায়। কোনো যন্ত্রের লভ্য কার্যকর শক্তি যদি বেশি হয় তবে কর্মদক্ষতা বেশি হবে। অর্থাৎ ঐ যন্ত্রে প্রদত্ত শক্তির বেশির ভাগ অংশ কাজে রূপান্তরিত হয়।আর  কর্মদক্ষতা যত কম হবে গৃহীত শক্তির তত কম অংশ কাজে রূপান্তরিত হবে। অর্থাৎ, লভ্য কার্যকর শক্তি কর্মদক্ষতার সমানুপাতিক । অতএব, বলা যায় যে, লভ্য কার্যকর শক্তি কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করে।

১৮। প্রঃ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার সাহায্যে কীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় দ্রুত গতিশীল ও উচ্চ শক্তিসম্পন্ন  কোনো কণার আঘাতে একটি বৃহদাকার নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভরের নিউক্লিয়াস ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। যে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় প্রাপ্ত শক্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় সেই বিক্রিয়াকে বলা হয় নিউক্লীয় ফিশন। নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্রে যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয় তার একটি হচ্ছে ইউরেনিয়াম (U-235) । একে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে এটি ভেঙ্গে ক্রিপটন (Kr-92) এবং বেরিয়াম (Ba-141) উৎপন্ন হয়, তার সাথে আরো তিনটি নিউট্রন বেরিয়ে আসে। উৎপন্ন তিনটি নিউট্রন অন্য তিনটি ইউরেনিয়াম নিউক্লিয়াসকে ভেঙ্গে দেয় এবং এভাবে চেইন বিক্রিয়া চলতেই থাকে।

এভাবে উৎপন্ন তাপশক্তি ব্যবহার করে পানিকে বাষ্পীভূত করে সেই বাষ্প দিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয় এবং এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বলা হয় নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র। এরকম বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে খুব সহজেই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে পাবনা জেলার রূপপুরে বাংলাদেশ সরকার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২৪০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  

১৯। প্রঃ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া পরিবেশ বান্ধব নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় দ্রুত গতিশীল ও উচ্চ শক্তিসম্পন্ন  কোনো কণার আঘাতে একটি বৃহদাকার নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভরের নিউক্লিয়াস ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন এই শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এ ধরণের নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয় তার একটি হচ্ছে ইউরেনিয়াম (U-235) । একে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে এটি ভেঙ্গে ক্রিপটন (Kr-92), বেরিয়াম (Ba-141),তিনটি নিউট্রন এবং বিপুলব তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।উৎপন্ন তিনটি নিউট্রন অন্য তিনটি ইউরেনিয়াম নিউক্লিয়াসকে আবার ভেঙ্গে দেয় এবং এভাবে চেইন বিক্রিয়া চলতেই থাকে।         

 

কিন্তু এই নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার পর যে বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় সেগুলো ভয়ংকর রকম তেজস্ক্রিয়, তাই সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করার সময় অনেক রকমের সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় এবং এগুলোকে নিরাপদ বর্জ্যে পরিণত করতে হাজার হাজার বছর ধরে সংরক্ষণ করতে হয়। তাছাড়া নিউক্লিয়ার চুল্লীতে উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপ তৈরি হয়। তাই নিউক্লিয়ার চুল্লী এমন পদার্থ দিয়ে তৈরি করতে হয় যেন তা উচ্চ তাপ ও চাপ সহ্য করতে পারে এবং কোনো দূর্ঘটনা না ঘটে। কারণ নিউক্লিয়ার দূর্ঘটনা যে কত ভয়াবহ তা আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের ( বর্তমানে ইউক্রেন) চেরনোবিল এবং জাপানের ফুকুশিমা এর অভিজ্ঞতা থেকে জানি। সুতরাং এ আলোচনা থেকে বলা যায় যে, নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া পরিবেশ বান্ধব নয়।

২০। প্রঃ বায়োমাসকে শক্তির বহুমুখী উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম উৎস বায়োমাস। বায়োমাস বলতে সেই সব জৌব পদার্থকে বুঝায় যাদেরকে শক্তিতে রূপান্তর করা যায়। বায়োমাস শক্তির উৎস হিসেবে যে সব জৈব পদার্থকে ব্যবহার করা যায় সেগুলো হচ্ছে গাছ-গাছালী, জ্বালানি কাঠ, কাঠের বর্জ্য, শস্য, ধানের তুষ ও কুড়া, লতা –পাতা, গৃহস্থালীর বর্জ্য, পশু-পাখির মল ইত্যাদি। বায়োমাস থেকে সহজে বায়োগ্যাস উৎপাদন করা যায়। এ গ্যাসকে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিকল্প হিসেবে গ্রাম-গঞ্জে রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। এ গ্যাসকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে। বায়োমাসের উৎস হিসেবে যে সব পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলো পুড়িয়ে ফেললে শেষ হয়ে যায়। তারপরও বায়োমাসকে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস বলার কারণ হলো নতুন করে আবার গাছ-পালা জন্মানো যায়। তেল, গ্যাস বা কয়লার মতো পৃথিবী থেকে এটা চিরদিনের জন্য অদৃশ্য হয়ে যাবে না। এজন্য বায়োমাসকে শক্তির বহুমূখী উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২১। প্রঃ ভূ- তাপীয় শক্তিকে কীভাবে ব্যবহারযোগ্য করা যায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ পৃথিবীর ভেতরের বা ভূ-অভ্যন্তরের তাপকে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ভূ-অভ্যন্তরের গভীরে তাপের পরিমাণ এত বেশি যে তা শীলাখন্ডকে গলিয়ে ফেলতে পারে। এ গলিত শীলাকে ম্যাগমা বলে। ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের ফলে কখনো কখনো এই ম্যাগমা উপরের দিকে উঠে আসে, যা ভূ-পৃষ্ঠের খানিকটা নিচে জমা হয়। এ সকল জায়গা হট স্পট (Hot Spot) নামে পরিচিত। ভূ-গর্ভস্থ পানি এ হট স্পটের সংস্পর্শে এসে বাষ্পে পরিণত হয়। এই বাষ্প ভূ-গর্ভে আটকা পড়ে যায়। হট স্পটের উপর গর্ত করে পাইপ ঢুকিয়ে উচ্চ চাপে এই বাষ্পকে বের করে আনা যায় এবং এর দ্বারা টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেমন- নিউজিল্যান্ডে ভূ-তাপীয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। 



 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.