Header Ads

Header ADS

SSC Physics Chapter 3 : বল (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

                                       অধ্যায়-৩:বল (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

১। প্রঃ কর্দমাক্ত রাস্তায় হাঁটতে কষ্টকর কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ রাস্তায়  হাঁটার সময় আমরা যখন পা দিয়ে মাটিতে ধাক্কা দিই অর্থাৎ বল প্রয়োগ করি তখন নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী মাটিও আমাদের শরীরে সমান ও বিপরীত বল প্রয়োগ করে। এই সমান ও বিপরীত বলটা দিয়েই আমাদের ত্বরণ হয় এবং আমরা হাঁটি। কিন্তু কর্দমাক্ত মাটিতে হাঁটা কষ্টকর হয়। কারণ কাদার উপর পা দিয়ে ধাক্কা বা বল প্রয়োগ করলে কাদা সরে যায় এবং পা কাদার মধ্যে আটকে যায়। তাই নিউটনের তৃতীয় সূত্রের পাল্টা বলটাও সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। এ কারণে কর্দমাক্ত রাস্তায় হাঁটা কষ্টকর।

২। প্রঃ গাড়ি ব্রেক করার পর ও একটু সামনে গিয়ে থামে কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ গাড়ি ব্রেক করার পরও সামনে গিয়ে থামে গতি জড়তার কারণে। আমরা জানি, গতিশীল বস্তু গতিশীল থাকতে চাওয়ার প্রবণতা বা গতিশীল অববস্থা বজায় রাখাতে চাওয়ার ধর্মই হলো গতি জড়তা। এই গতি জড়তার জন্য গাড়ি ব্রেক করার সাথে সাথে থেমে না গিয়ে কিছুটা সামনে গিয়ে থামে। 

৩। প্রঃ বল একটি লব্দ রাশি- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ আমরা জানি, যে সকল রাশি মৌলিক রাশির উপর নির্ভর করে তাদেরকে লব্দ রাশি বলে। যেমন-বল একটি লব্দ রাশি, একে প্রকাশ করতে ভর ও ত্বরণের প্রয়োজন হয়। আবার ত্বরণও একটি লব্দ রাশি,যাকে প্রকাশ করারা জন্য সরণ ও সময়ের প্রয়োজন।

সুতরাং বলকে প্রকাশ করার জন্য তিনটি মৌলিক রাশি, ভর, সরণ ও সময়ের প্রয়োজন । তাই বল একটি লব্দ রাশি।   

৪। প্রঃ বস্তুর ওজন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বস্তুর ওজন (mg)স্থান নিরপেক্ষ নয়, অভিকর্ষজ ত্বরণের (g) উপর নির্ভর করে। আবার g এর মান পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়। কারণ পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার না হওয়ায় এর ব্যাসার্ধ সর্বত্র সমান নয়।মেরু অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ সবচেয়ে কম এবং বিষুব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি। ফলে মেরু অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান সবচেয়ে বেশি হয় এবং বস্তুর ওজনও বেড়ে যায়। কিন্তু বিষুব অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান কম হওয়ায় বস্তুর ওজন কমে যায়। এ জন্য বস্তুর ওজন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়।    

৫। প্রঃ 50 N বল বলতে কী বুঝায়?

উত্তরঃ 50 N বল বলতে বুঝায় যে, 1 kg  ভরের কোনো বস্তুর মধ্যে 50 ms^-2   ত্বরণ সৃষ্টি করতে 50 N  বল প্রয়োগ করতে হয়। অন্যভাবে বলা যায়,  50 kg  ভরের কোনো বস্তুর উপর 50 N বল প্রয়োগ করলে ঐ বস্তুতে 1 ms^-2 ত্বরণ সৃষ্টি হয়।

অথবা, 10 kg  ভরের কোনো বস্তু মধ্যে 5 ms^-2   ত্বরণ সৃষ্টি করতে 50 N  বল প্রয়োগ করতে হয়।

৬। প্রঃ 6 × 10^5 N  বল বলতে কী বুঝায়?

উত্তরঃ 6 ×10^5 N বল বলতে বুঝায় যে, 1 kg  ভরের কোনো বস্তুর মধ্যে 6 ×10^5 ms^-2   ত্বরণ সৃষ্টি করতে 6×10^5 N  বল প্রয়োগ করতে হয়। অন্যভাবে বলা যায়, 6 ×10^5 kg  ভরের কোনো বস্তুর উপর 6 ×10^5 N বল প্রয়োগ করলে ঐ বস্তুতে 1 ms^-2 ত্বরণ সৃষ্টি হয়।

৭। প্রঃ নিউটনের ২য় সূত্র থেকে কীভাবে ১ম সূত্র পাওয়া যায়?

উত্তরঃ নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র থেকে আমরা পাই, বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার এর উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক।

অর্থাৎ বাহ্যিক বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল গতিশীল থাকবে। 

৮। প্রঃ দেখাও যে বলের ঘাত ভরবেগের পরিবর্তনের সমান।

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল ও এর ক্রিয়াকালীন সময়ের গুণফলকে বলের ঘাত বলে।

যদি m ভরবিশিষ্ট কোনো বস্তু u আদিবেগে চলার সময় এর উপর F বল t সময় ধরে ক্রিয়াশীল থাকায় বস্তুটি বেগ প্রাপ্ত  হয়,

৯। প্রঃ দূর্বল নিউক্লিয় বল ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরস্থ মৌলিক কণাগুলোর মধ্যে যে স্বল্প পাল্লার ও স্বল্প মানের বল ক্রিয়া করে তাকে দূর্বল নিউক্লিয় বল বলে। এই বলের কারণেই নিউক্লিয়াসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয় এবং নিউক্লিয়াস হতে বিটা রশ্মি বা ইলেকট্রন বের হয়ে যায়। অধিকাংশ তেজস্ক্রিয় ভাঙ্গন বিক্রিয়া এই বলের কারণেই সংঘটিত হয়।এই বল খুবই অল্প দূরত্বে (10^-18 m) কাজ করে।দূর্বল নিউক্লিয় বল তাড়িৎ চৌম্বক বলের চেয়ে 10^10 গুণ দূর্বল, কিন্তু মহাকর্ষ বলের মতো এত দূর্বল নয়। 

১০। প্রঃ মহাকর্ষ ধ্রুবকের মান 6.673 ×10^-11 N m^kg^-2 বলতে কী বুঝায়?

উত্তরঃ মহাকর্ষ ধ্রুবকের মান 6.673 ×10^-11 N m^kg^-2 বলতে বুঝায় 1 kg  ভরের দুটি বস্তু পরষ্পর থেকে 1 m দূরে স্থাপন করলে তারা পরষ্পরকে 6.673 ×10^-11 N বলে আকর্ষণ করে।

১১। প্রঃ বস্তুর ভর ধ্রুব হলেও ওজন ধ্রুব নয়- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বস্তুর ভর একটি স্থান নিরপেক্ষ রাশি। এটি অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভর করে না । তাই বস্তুর ভর (m) পৃথিবীর সর্বত্র একই থাকে। কিন্তু বস্তুর ওজন (mg) অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভর করে। পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার না হওয়ায় এর ব্যাসার্ধ সর্বত্র সমান নয়। মেরু অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ সবচেয়ে কম এবং বিষুব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি। মেরু অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান সবচেয়ে বেশি বলে বস্তুর ওজনও বেশি হয়। আবার বিষুব অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান কম হওয়ায় বস্তুর ওজনও কম হয়। এ জন্য বস্তুর ওজন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়। অতএর বলা যায়, বস্তুর ভর ধ্রুব হলেও ওজন ধ্রুব নয়।

১২। প্রঃ পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজন শূন্য হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বস্তুর ওজন (mg) অভিকর্ষজ ত্বরণের (g) উপর নির্ভর করে। আবার g এর মান পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয় ।কারণ পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার না হওয়ায় এর ব্যাসার্ধ সর্বত্র সমান নয়।অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর মান পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বস্তুর দূরত্বের উপর নির্ভর করে। কোনো বস্তুকে যদি পৃথিবীর কেন্দ্রে নেওয়া যায় তবে বস্তুর দূরত্ব শূন্য হয় বলে g এর মানও শূন্য হয়। ফলে বস্তুর ওজনও (mg = m x o =0) শূন্য হয়। এজন্য পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজন শূন্য হয়।    

১৩। প্রঃ ঘর্ষণ বল কেন উৎপন্ন হয়?

উত্তরঃ আপাত দৃষ্টিতে কোনো বস্তুর পৃষ্ঠ বা তলকে মসৃণ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এর উপর উঁচু নিচু অনেক খাঁজ থাকে। যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর উপর দিয়ে গতিশীল হয় তখন উভয় বস্তুর স্পর্শতলের এ খাঁজগুলো একটির ভিতর একটি ঢুকে যায়, অর্থাৎ খাঁজগুলো পরস্পর আটকে যায়। এই আটকে যাওয়ার কারণে বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে ঘর্ষণ বল উৎপন্ন হয়।  উঁচু-নিচু খাঁজ যত বেশি হবে অর্থাৎ বস্তু যত বেশি অমসৃণ হবে, ফলে ঘর্ষণ বল তত বেশি হবে।

১৪। প্রঃ ঘর্ষণ বল সব সময় ঋণাত্মক হয় কেন?

উত্তরঃ  ঘর্ষণ হলো এক ধরণের বাধাদানকারী বল, যা বস্তুর গতিকে মন্থর করে। এটি গতির বিপরীতে কাজ করে বলে বস্তুর গতি হ্রাস পায় তথা মন্দন হয়। অর্থাৎ ঘর্ষণের কারণে বস্তু সর্বদা ঋণাত্মক ত্বরণ প্রাপ্ত হয়। তাই ঘর্ষণ বল সব সময় ঋণাত্মক হয়।

১৫। প্রঃ সাম্য বল ও অসাম্য বলের মধ্যে দুটি পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ সাম্য বল ও অসাম্য বলের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

           সাম্যবল

        অসাম্য বল

কোনো বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্দি শূন্য হয় অর্থাৎ ত্বরণ না হয়, তবে ঐ বলগুলো হলো সাম্য বল ।  

 কোনো বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্দি শূন্য না হয় অর্থাৎ ত্বরণ হয়, তবে ঐ বলগুলো হলো অসাম্য বল ।

যে বস্তুর উপর বলগুলো ক্রিয়া করে তা  সাম্যাবস্থায় থাকে ।

যে বস্তুর উপর বলগুলো ক্রিয়া করে তা  সাম্যাবস্থায় থাকে না।

১৬। প্রঃ প্রাবাহী ঘর্ষণের চারটি ব্যবহার লিখ।

উত্তরঃ প্রবাহী ঘর্ষণের চারটি ব্যবহার হলো- 

(ক) পুকুরে সাঁতার কাটার সময় (খ) ঘুড়ি উড়ানোর সময়

(গ) ডুবোজাহাজ চলাচলে

(ঘ) প্যারাসুট দিয়ে নিচে নামার সময়


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.