Header Ads

Header ADS

SSC Physics Chapter 2 :গতি (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

 অধ্যায়-২:গতি (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

১। প্রঃ একটি বিন্দুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর দূরত্বের পরিবর্তন না হলেও অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ একটি বিন্দুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর দূরত্বের পরিবর্তন না হলেও অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে।  পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় অবস্থান একটি তাৎপর্যপূর্ণ শব্দ । অবস্থান বলতে দূরত্ব ও দিক উভয়ই বুঝায়। কোনো প্রসঙ্গ বিন্দুর সাপেক্ষে, কোনো বস্তুর দূরত্বের পরিবর্তন না হয়ে যদি শুধু দিকের পরিবর্তন হয় অর্থাৎ একই দূরত্বে ভিন্ন দিকে অবস্থান নেয় তাহলে তাকে অবস্থানের পরিবর্তন বলা হয়। যেমন যদি বলা হয় যে আমার কাছ থেকে একটি বই ১ মিটার দূরে আছে । এর দ্বারা বইটি কর দূরে তা বুঝায়, কিন্তু সঠিক অবস্থান বুঝায় না, বইটি আমার কাছ থেকে যে কোনো দিকে,উপরে বা নিচেও থাকতে পারে।বইটির সঠিক অবস্থান বলতে হলে দিকের উল্লেখ করতে হবে। হতে পারে বইটি আমার নিকট থেকে ১ মিটার উত্তরে বা দক্ষিণে বা অন্য কোনো দিকে আছে। অর্থাৎ কোনো বস্তু যে কোনো দিকেই থাক না কেন দূরত্ব একই থাকে কিন্তু দিকের পরিবর্তন হলে বস্তুর অবস্থানও পরিবর্তন হয়। তাই একটি বিন্দুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর দূরত্বের পরিবর্তন না হলেও অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে।


২। প্রঃ সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি পর্যায়বৃত্ত গতি হলেও স্পন্দন গতি নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো বস্তু যদি তার গতিপথের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে তবে বস্তুর ঐ গতিকে পর্যায়বৃত্ত গতি বলে। আবার পর্যায়বৃত্ত গতিসম্পন্ন কোনো বস্তু তার পর্যায় কালের অর্ধেক সময় একটি নির্দিষ্ট দিকে এবং বাকী অর্ধেক সময় পূর্বগতির বিপরীত দিকে গতিশীল থাকে তবে বস্তুর ঐ গতিকে স্পন্দন গতি বলে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একটি ধ্রুব বেগে সর্বদা একইদিকে গতিশীল রয়েছে। তাই সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি পর্যায়বৃত্ত গতি, কিন্তু স্পন্দন গতি নয়। 


৩। প্রঃ সরল দোলকের গতি স্পন্দন গতি কেন?

উত্তরঃ  পর্যায়বৃত্ত গতিসম্পন্ন কোনো বস্তু যদি তার পর্যায় কালের অর্ধেক সময় একটি নির্দিষ্ট দিকে এবং বাকী অর্ধেক সময় একই পথে তার বিপরীত দিকে চলে তবে ঐ বস্তুর গতিকে স্পন্দন গতি বলে। একটি সরল দোলক একটি নির্দিষ্ট বিন্দুর দুই পাশে স্পন্দিত হয়। সরল দোলকের ববকে (গোলক পিন্ড) একটুখানি টেনে ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে গতিশীল হয় এবং সর্বোচ্চ গতিতে সাম্যাবস্থায় পৌঁছার পর গতি আবার কমতে থাকে। গতি কমতে কমতে এটি এক সময় থেমে যায় এবং গতিপথ পরিবর্তন করে বিপরীত দিকে গতিশীল হয়। বিপরীত দিকে সর্বোচ্চ গতি লাভ করার পর আবার গতি কমতে থাকে। এক সময় পুরোপুরি থেমে আবার আগের দিকে ধীরে ধীরে গতিশীল হয়। এভাবে সরল দোলক সাম্যবিন্দুর দুই দিকে স্পন্দিত হয়। এজন্য সরল দোলকের গতি একটি স্পন্দন গতি।  


৪। প্রঃ কম্পনশীল সুর শলাকার গতিকে স্পন্দন গতি বলা হয় কেন?

উত্তরঃ  পর্যায়বৃত্ত গতিসম্পন্ন কোনো বস্তু তার পর্যায় কালের অর্ধেক সময় একটি নির্দিষ্ট দিকে এবং বাকী অর্ধেক সময় একই পথে পূর্বগতির বিপরীত দিকে চলতে থাকে তবে বস্তুর ঐ গতিকে স্পন্দন গতি বলে। একটি সুর শলাকা যখন কম্পিত হতে থাকে তখন উহা তার গতিপথের উভয় দিকে স্পন্দিত হয়। উভয় দিকে স্পন্দিত হওয়ার জন্য একই সময় নেয় এবং সরণের দিক বিপরীত হয়। এ কারণে সুর শলাকার গতিকে স্পন্দন গতি বলা হয়।


৫। প্রঃ দ্রুতি ও বেগের মধ্যে দুটি পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ  দ্রুতি ও বেগের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরুপঃ

            দ্রুতি

            বেগ

সরল বা বক্র পথে সময়ের সাথে কোন বস্তুর অবস্থানের পরিবির্তনের হারকে দ্রুতি বলে। 

সময়ের সাথে কোন বস্তুর সরণের হারকে দ্রুতি বলে।  

দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি । 

বেগ একটি ভেক্টর রাশি।


৬। প্রঃ “অভিকর্ষজ ত্বরণ একটি লব্দ রাশি” – ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়ন্ত কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে। 

এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, অভিকর্ষজ ত্বরণকে প্রকাশ করার জন্য সরণ ও সময় দুটি মৌলিক রাশি প্রয়োজন হয়। এজন্য অভিকর্ষজ ত্বরণ একটি লব্দ রাশি।  

৭। প্রঃ বেগ ও ত্বরণের মধ্যে দুতি পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ বেগ ও ত্বরণের মধ্যে পার্থক্যঃ

বেগ

 ত্বরণ

সময়ের সাথে কোন বস্তুর সরণের হারকে দ্রুতি বলে।

সময়ের সাথে কোন বস্তুর আসম বেগের পরিবর্তনের হারকে ত্বরণ বলে।  

বেগের মাত্রা ML-1  । 

ত্বরণের মাত্রা ML-2   

 

৮। প্রঃ সরণ ও দূরত্ব কি সর্বদা একই - ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দিকে পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনকে সরণ বলে। বস্তুর আদি অবস্থান ও শেষ অবস্থানের মধ্যবর্তী ন্যূনতম দূরত্ব অর্থাৎ সরলরৈখিক দূরত্বই সরণের মান।  আবার কোনো বিন্দু থেকে গতিশীল বস্তু যে কোনো দিক থেকে অপর বিন্দুতে পৌঁছালে বস্তুটির অবস্থানের যে পরিবর্তন হয় তাই দূরত্ব। অর্থাৎ দুরত্ব হলো বস্তুটি আদি বিন্দু থেকে যে পথ ধরে শেষ বিন্দুতে পৌঁছায় সেই পথের দৈর্ঘ্য। বস্তুটি যদি আদি বিন্দু থেকে সরল রৈখিক পথে শেষ বিন্দুতে যায় তবে দূরত্ব ও সরণের মান একই হবে, কিন্তু সরণের দিক হবে আদি বিন্দু থেকে শেষ বিন্দুর দিকে। আবার বস্তুটির গতি যদি সরলরৈখিক না হয়, তবে সরণের মান অপেক্ষা দূরত্ব বেশি হবে। কারণ দূরত্ব একটি স্কেলার রাশি ও সরণ একটি ভেক্টর রাশি। সরণের মান হবে আদি অবস্থান ও শেষ অবস্থানের মধ্যবর্তী ন্যূনতম দূরত্ব এবং দিক হবে আদি অবস্থান থেকে শেষ অবস্থানের দিকে। এজন্য বলা হয় সরণ ও দূরত্ব সর্বদা একই নয়।

৯। প্রঃ সমবেগে চলমান বস্তুর ত্বরণ শূন্য কেন?

অথবা, ‘বেগের পরিবর্তন না হলে ত্বরণ থাকে না’ – ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ আমরা জানি, বেগের পরিবর্তনের হার তথা একক সময়ে বেগের পরিবর্তনই ত্বরণ । যদি কোনো বস্তুর আদিবেগ u , t সময় পর শেষবেগ v হয়, 

অতএব, কোনো বস্তু সমবেগে চললে বা বেগের পরিবর্তন না হলে বস্তুটির ত্বরণ থাকে না। 


১০। প্রঃ সমত্বরণ বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।  

উত্তরঃ কোনো বস্তুর বেগ যদি নির্দিষ্ট দিকে একই হারে বাড়তে থাকে, তবে ঐ বস্তুর ত্বরণকে সুষম ত্বরণ বলে। সুষম বা সমত্বরণের উদাহরণ হলো অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়ন্ত বস্তুর ত্বরণ। যদি একটি বস্তু ভূ-পৃষ্ঠে মুক্তভাবে পড়তে থাকে, তখন এটি 9.8 ms-2 ত্বরণে পড়তে থাকে। অর্থাৎ বস্তুটি যখন নিচের দিকে পড়তে থাকে তখন এর বেগ প্রতি সেকেন্ডে 9.8 ms-1  হারে বাড়তে থাকে । এজন্য অভিকর্ষজ ত্বরণ হলো সুষম ত্বরণ ।


১১। প্রঃ ‘অভিকর্ষজ ত্বরণ সুষম ত্বরণ’ – ব্যাখ্যা কর।  

উত্তরঃ অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়ন্ত কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে।অভিকর্ষজ ত্বরণ একটি সুষম ত্বরণ এবং এর উদাহরণ হলো অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়ন্ত বস্তুর ত্বরণ। একটি বস্তু ভূ-পৃষ্ঠে যদি মুক্তভাবে পড়তে থাকে, তখন এটি 9.8 ms-2 ত্বরণে পড়তে থাকে। অর্থাৎ বস্তুটি যখন নিচের দিকে নামতে থাকে তখন এর বেগ প্রতি সেকেন্ডে 9.8 ms-1  হারে বৃদ্ধি পায়। এজন্য অভিকর্ষজ ত্বরণ হলো সুষম ত্বরণ ।


১২। প্রঃ একটি গাছ থেকে আম পড়ার সময় এর বেগের কোনো পরিবর্তন হবে কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ আমরা জানি, অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে যখন কোনো বস্তু পড়তে থাকে, তখন এটি অভিকর্ষজ ত্বরণে পড়তে থাকে। একটি আম গাছ থেকে পড়ার সময় এটি অভিকর্ষজ ত্বরণে (9.8 ms-2 ) পড়তে থাকবে। অর্থাৎ আমটি যখন নিচের দিকে নামতে থাকবে তখন এর বেগ প্রতি সেকেন্ডে 9.8 ms-1  হারে বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং গাছ থেকে আম পড়ার সময় এর বেগ বৃদ্ধি পাবে।

১৩। প্রঃ অভিকর্ষজ ত্বরণের মাত্রা নির্ণয়।                                                            

উত্তরঃ আমরা জানি, অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়ন্ত কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারই অভিকর্ষজ ত্বরণ।


১৪। প্রঃ তাৎক্ষণিক দ্রুতি বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তুর কোনো একটি বিশেষ মুহূর্তের দ্রুতিকে তাৎক্ষণিক দ্রুতি বলে।

যে কোনো মুহূর্তের তাৎক্ষণিক দ্রুতি নির্ণয় করতে হলে অতি অল্প বা ক্ষুদ্র সময় ব্যবধানে অতিক্রান্ত দূরত্ব জানতে হবে। তারপর সেই দূরত্বকে সময় দিয়ে ভাগ করলে তাৎক্ষণিক দ্রুতি পাওয়া যাবে।


 


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.