SSC Chemistry Chapter 11: খনিজ সম্পদঃ জীবাশ্ম (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)
অধ্যায়-১১:খনিজ সম্পদঃ জীবাশ্ম
(অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)
১। প্রশ্নঃ C2H6
কে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলা হয় কেন?
ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ যে সব
হাইড্রোকার্বনে কার্বন–কার্বন একক বন্ধন বিদ্যমান তাদেরকে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন
বলে। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনকে অ্যালকেনও বলে। অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত Cn H2n+2 । C2H6 হলো
ইথেন। এটি কার্বন-কার্বন একক বন্ধন দ্বারা গঠিত, যা নিচে দেখানো হলোঃ
যেহেতু ইথেনের মধ্যে C - C একক বন্ধন বিদ্যমান, তাই ইথেন
একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
২। প্রশ্নঃ ফেনল একটি অ্যারোমাটিক যৌগ-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ বিশেষ ধরনের অসম্পৃক্ত বলয় বিশিষ্ট যৌগ তথা বেনজিন, বেনজিনের জাতক ও বেনজিনের ধর্ম সদৃশ্য বলয়াকার যৌগকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলে। এসব যৌগ সমতলীয় চাক্রিক হয়, এতে একান্তর দ্বিবন্ধন উপস্থিত থাকে। ফেনল একটি বেনজিন জাতক এবং সমতলীয় চাক্রিক যৌগ, যাতে তিনটি একান্তর দ্বিবন্ধন রয়েছে।
এ কারণে ফেনল একটি অ্যারোমেটিক যৌগ।
৩। প্রশ্নঃ ইথেন ও ইথিন এর মধ্যে কোনটি কম
দাহ্য-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ইথেন ও
ইথিনের মধ্যে ইথিন কম দাহ্য। ইথেন ও ইথিন উভয় যৌগই হাইড্রোকার্বন অর্থাৎ
হাইড্রোজেন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত । কার্বন ও হাইড্রোজেন উভয়ই দাহ্য পদার্থ হলেও
কার্বনের তুলনায় হাইড্রোজেন অধিকতর দাহ্য। আবার ইথেনে মধ্যে হাইড্রোজেনের শতকরা
পরিমাণ বেশি। তাছাড়া ইথেন অপেক্ষা ইথিনের দহণে কম সংখ্যক অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।
C2H6 + 3.5 O2 = 2CO2
+ 3H2O + তাপ
C2H4 + 3 O2 = 2CO2
+ 2H2O + তাপ
উল্লেখিত কারণে ইথেন অপেক্ষা ইথিন কম দাহ্য।
৪। প্রশ্নঃ অ্যালকেন, অ্যালকিন অপেক্ষা ভালো জ্বালানি -ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ অ্যালকেন
ও অ্যালকিন উভয় যৌগই হাইড্রোকার্বন অর্থাৎ হাইড্রোজেন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত ।
কার্বন ও হাইড্রোজেন উভয়ই দাহ্য পদার্থ হলেও কার্বনের তুলনায় হাইড্রোজেন অধিকতর
দাহ্য। আবার অ্যালকেন সম্পৃক্ত ও অ্যালকিন অসম্পৃক্ত হওয়ায় অ্যালকেনের মধ্যে
হাইড্রোজেনের শতকরা পরিমাণ বেশি। এক্ষেত্রে অ্যালকেন বায়ুর অতিরিক্ত অক্সিজেনের
সাথে বিক্রিয়া করে CO2 , H2O ও অধিক
তাপ শক্তি উৎপন্ন করে। কিন্তু অ্যালকিনে হাইড্রোজেনের পরিমাণ কম থাকায় উৎপন্ন
তাপের পরিমাণও কম হয়। যেমন- ইথেন ও ইথিনের দহণ বিক্রিয়া নিম্নরূপ;
C2H6 + 3.5 O2 = 2CO2
+ 3H2O + তাপ
C2H4 + 3 O2 = 2CO2
+ 2H2O + তাপ
উল্লেখিত কারণে অ্যালকেন, অ্যালকিন অপেক্ষা ভালো জ্বালানি।
৫। প্রশ্নঃ অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা
কর।
উত্তরঃ অ্যালকেনের
অপর নাম প্যারাফিন। প্যারাফিন একটি ল্যাটিন শব্দ। এর অর্থ হলো নিষ্ক্রিয় বা
আসক্তিহীন। অ্যালকেনের মধ্যে C- C একক
বন্ধন এবং C- H বন্ধনসমূহ সিগমা বন্ধন, যা অত্যন্ত শক্তিশালী। তাই এরা
সাধারণত রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় এবং সাধারণ অবস্থায় এসিড, ক্ষারক, জারক বা বিজারকের
সাথে বিক্রিয়া করে না। এ কারণে অ্যালকেনসমূহকে প্যারাফিন বলা হয়।
৬। প্রশ্নঃ অ্যালকিনকে অলিফিন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা
কর।
উত্তরঃ যে জৈব যৌগে কার্বন শিকলে অন্তত একটি কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে তাকে অ্যালকিন বলে। একে অলিফিনও বলে । অলিফিন শব্দের অর্থ তৈল উৎপাদনকারী (Olifin, Greek: Olefiant = Oil forming ) । অ্যালকিনের নিম্নতর সদস্যগুলো যেমন- ইথিন, প্রোপিন ইত্যাদি হ্যালোজেনের (Cl2, Br2) সঙ্গে বিক্রিয়া করে তৈলাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে। তাই অ্যালকিনকে অনেক সময় অলিফিন বলা হয়।
৭। প্রশ্নঃ অ্যালকাইল মূলক বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ অ্যালকেন
থেকে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু অপসারণ করলে যে একযোজী মূলকের সৃষ্টি হয় তাকে
অ্যালকাইল মূলক বলে। অ্যালকাইল মূলককে সাধারণত R দ্বারা প্রকাশ করা হয়। তবে এর সাধারণ সংকেত CnH2n+1 , অর্থাৎ R = CnH2n+1
। অ্যালকেনের নামের শেষ অংশের এন (ane) বাদ দিয়ে আইল(yl)
যোগ করে অ্যালকাইল মূলকের নামকরণ করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মিথেন (CH4) থেকে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু
অপসারণ করলে মিথাইল (CH3-)
মূলক সৃষ্টি হয়। একইভাবে ইথেন (CH3-CH3) থেকে ইথাইল (CH3-CH2-/ C2H5-),
প্রোপেন (CH3-CH2-CH3) থেকে প্রোপাইল (CH3-CH2- CH2 - / C3H7 -), বিউটেন (CH3- CH2- CH2
- CH3) থেকে বিউটাইল (CH3- CH2- CH2-CH2
-/ C4H9 -)
ইত্যাদি।
৮। প্রশ্নঃ ক্লোরিনেশন বলতে কী বুঝায়?
উত্তরঃ উপযুক্ত
প্রভাবক ও তাপমাত্রার উপস্থিতিতে কোনো হাইড্রোকার্বন থেকে ক্লোরিন দ্বারা
হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করার বিক্রিয়াকে ক্লোরিনেশন বলে। যেমন-অতিবেগুনি আলোর (
৯। প্রশ্নঃ পলিমার বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ আকৃতির যে অণু গঠন করে তাকে পলিমার বলে। যে প্রক্রিয়ায় বা বিক্রিয়ায় পলিমার উৎপন্ন হয় তাকে পলিমারকরণ বলে। যে অসংখ্য ছোট ছোট অণু পরস্পর যুক্ত হয় তাদের প্রত্যেকটিকে এক একটি মনোমার বলে। যেমন- প্রোটিন হলো আমাইনো এসিডের পলিমার । ইথিনের পলিমার হলো পলিথিন।
১০। প্রশ্নঃ পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যে বিক্রিয়ায় উচ্চ তাপ ও চাপের প্রভাবে অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ আকৃতির অণু গঠন করে তাকে পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলে। এই বিক্রিয়ায় যে বৃহৎ আকৃতির যৌগ উৎপন্ন হয় তা হলো পলিমার এবং যে অসংখ্য ছোট ছোট অণু পরস্পর যুক্ত হয় তাদের প্রত্যেকটি হলো এক একটি মনোমার ।
১১। প্রশ্নঃ ইথানলকে জৈব জ্বালানি বলা হয় কেন?
ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ খনিজ
জ্বালানি যেমন-কেরোসিন, পেট্রোল, ডিজেল প্রভৃতির মতো ইথানলকে পুড়িয়ে তাপশক্তি
উৎপন্ন করা যায় এবং কলকারখানা, গাড়ি , বিমান,জাহাজ প্রভৃতি চালানো যাতে পারে। ।
খনিজ জ্বলানির উপর চাপ কমানোর জন্য উন্নত বিশ্বে এর সাথে অ্যালকোহলকে মিশিয়ে মোটর
ইঞ্জিনের জ্বলানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গ্যাসহোল এক প্রকার জ্বালানি যেখানে
পেট্রলের সাথে ১০-২০% ইথানল মিশ্রিত থাকে। ইথানল একটি জৈব যৌগ। গাঁজন প্রত্রিয়ায়
শ্বেতসার জাতীয় পদার্থ যেমন- আলু, ভুট্টা, ইক্ষু প্রভৃতি থেকে ইথানল তৈরি করা যায়
এবং জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এজন্য ইথানলকে জৈব জ্বালানি বলে।
কোন মন্তব্য নেই