Header Ads

Header ADS

SSC Chemistry Chapter 3: পদার্থের গঠন (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর)

       অধ্যায়-৩:পদার্থের গঠন (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর) 

১। প্রঃ পরমাণু আধান নিরপেক্ষ কেন?

উত্তরঃ পরমাণু তিনটি স্থায়ী মূল কণিকা ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত। ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জবাহী, প্রোটন ধনাত্মক চার্জবাহী ও নিউট্রন চার্জহীন। প্রোটন ও নিউট্রন পরমাণুর কেন্দ্র নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে। অপরপক্ষে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বৃত্তাকার কক্ষপথে আবর্তন করে। আমরা জানি, পরমাণুতে ধনাত্মক চার্জবাহী প্রোটন ও ঋণাত্মক চার্জবাহী ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান থাকে এবং নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন হতে পারে। ফলে নিউক্লিয়াসের প্রোটনসমূহের মোট ধনাত্মক চার্জ এবং কক্ষপথে আবর্তনরত ইলেকট্রনসমূহের মোট ঋণাত্মক চার্জের মান সমান ও বিপরীত হয়, যা পরস্পরকে প্রশমিত করে। এ কারণে পরমাণু সামগ্রিকভাবে চার্জ বা আধান শূন্য হয় অর্থাৎ পরমাণু চার্জ বা আধান নিরপেক্ষ ।


 ৪। প্রঃ ফসফরাসের পরমাণবিক সংখ্যা 15 বলতে কী বুঝায়?                                                    

উত্তরঃ আমরা জানি, কোনো মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলে। এখানে ফসফরাসের পারমাণবিক সংখ্যা 15 বলতে বুঝায় যে ফসফরাস পরমাণুর নিউক্লিয়াসে 15টি প্রোটন রয়েছে।


৫। প্রঃ সোডিয়ামের ভরসংখ্যা সংখ্যা 23 বলতে কী বুঝায়?                                                

উত্তরঃ আমরা জানি, কোনো মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টিকে ঐ পরমাণুর ভরসংখ্যা বলে।                                                                                

সোডিয়ামের ভরসংখ্যা 23 বলতে বুঝায় যে, সোডিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসে 11টি প্রোটন ও 12টি নিউট্রন বিদ্যমান অর্থাৎ প্রোটন সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টি (11+12) = 23 । 


৬। প্রঃ পরমাণুর অধিকাংশ স্থান ফাঁকা- ব্যাখ্যা কর।                                                          

উত্তরঃ বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড পাতলা স্বর্ণপাতের উপর আলফা কণা (α) বিক্ষেপণ করে দেখান যে, অধিকাংশ আলফা কণা স্বর্ণপাত ভেদ করে সোজা চলে যায়, কিছু সংখ্যক রশ্মি এদিক ওদিক বেঁকে যায়, খুবই নগণ্য সংখ্যক (বিশ হাজারে একটি) রশ্মি পুরো বেঁকে পেছনে ফিরে আসে। এই পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি সিদ্ধান্তে আসেন যে, পরমাণুর কেন্দ্রে ক্ষুদ্র পরিসরে ভারী ধনাত্মক নিউক্লিয়াস ব্যতীত পরমাণুর অভ্যন্তরে পুরো স্থান ফাঁকা।                                                                                                                  


৭। প্রঃ রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের দুটি সীমাবদ্ধতা লিখ।                                                

উত্তরঃ রাদারফোর্ডই সর্বপ্রথম পরমাণুর নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনের কক্ষপথ সম্বন্ধে ধারণা দেন। তিনিই সর্বপ্রথম একটি গ্রহণযোগ্য পরমাণু মডেল প্রধান করলেও তার মডেলে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। নিম্নে দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হলোঃ 

(ক) এই মডেল পরমাণুর কক্ষপথে আকার (ব্যাসার্ধ) ও আকৃতি সম্বন্ধে ধারণা দিতে পারেনি।            

(খ) এই মডেলকে সৌরজগতের সাথে তুলনা করা যথাযথ হয়নি। সৌরজগতের সূর্য ও গ্রহগুলো সামগ্রিকভাবে আধানহীন বা চার্জহীন। কিন্তু পরমাণুতে ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের আধান বা চার্জ আছে। এই মডেলে চার্জহীন সূর্য ও গ্রহগুলোর সাথে চার্জযুক্ত ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের তুলনা করা হয়েছে। কাজেই চার্জহীন বস্তুর সাথে চার্জযুক্ত বস্তুর তুলনা সঠিক হয়নি।   


৮। প্রঃ বোর পরমাণু মডেলের দুটি সীমাবদ্ধতা লিখ।                                                        

উত্তরঃ বোর মডেল সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য পরমাণু মডেল হলেও এরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।  নিম্নে দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হলোঃ                                                                                    

(ক) এই মডেলের সাহায্যে এক ইলেকট্রনবিশিষ্ট পরমাণুর পারমাণবিক বর্ণালি ব্যাখ্যা করা যায় কিন্তু একাধিক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুর পারমাণবিক বর্ণালি ব্যাখ্যা করা যায় না।                              

(খ) বোর মডেল অনুসারে এক শক্তিস্তর থেকে ইলেকট্রন অন্য শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হলে পারমাণবিক বর্ণালিতে একটি রেখা পাবার কথা । কিন্তু শক্তিশালী বর্ণালি-বীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যায় প্রতিটি রেখা অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বা সূক্ষ্ণ রেখার সমষ্টি। প্রতিটি রেখা কেন অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বা সূক্ষ্ণ রেখার সমষ্টি হয় এই মডেলে তার কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।


৯। প্রঃ পরমাণুতে কখন বর্ণালির সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর।                                                      

উত্তরঃ বর্ণালি হলো বিভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোর তথা বিভিন্ন বর্ণের সমাহার।

শক্তির উৎস থেকে পরমাণুর ইলেকট্রনসমূহ বিভিন্ন পরিমাণে শক্তি শোষণ করে উদ্দীপিত হয়ে বিভিন্ন উচ্চ শক্তিস্তরে উন্নীত হয়। পরে শক্তির উৎস সরিয়ে নিলে উত্তেজিত ইলেকট্রনসমূহ শক্তি বিকিরণ করে নিম্ন শক্তিস্তরে ফিরে আসে। এই বিকিরিত রশ্মিকে প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করালে পারমাণবিক বর্ণালির সৃষ্টি হয়।                                                                                                                  


১০। প্রঃ Na2S4O6 এর আপেক্ষিক আনবিক ভর নির্ণয় কর।  

উত্তরঃ আমরা জানি, কোনো মৌলিক বা যৌগিক অণুতে যে পরমাণুগুলো থাকে তাদের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরকে নিজ নিজ পরমাণু সংখ্যা দিয়ে গুণ করে যোগ করলে প্রাপ্ত যোগফলই হলো ঐ পদার্থের আপেক্ষিক আনবিক ভর ।

Na2S4O6 এর মধ্যে-                                                                                              

Na এর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = 23  

S এর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = 32                                                                                                      

O এর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = 16                                                                                        

Na2S4O6  এর আপেক্ষিক আনবিক ভর = 23 x 2 + 32 x 4 + 16 x 6 = 270 


১১। প্রঃ ৩য় শক্তিস্তরে f অরবিটাল নেই কেন?                                                                

উত্তরঃ ৩য় শক্তিস্তরের জন্য n = 3 এবং উপশক্তিস্তর l এর মান 0 থেকে (n -1) পর্যন্ত, অর্থাৎ  n=3 হলে  l = 0, 1, 2 । আমরা জানি, l এর মান 0, 1 2 এর জন্য s, p d অরবিটাল সম্ভব। কিন্তু f অরবিটালের জন্য l = 3 হওয়া প্রয়োজন। যেহেতু তৃতীয় শক্তিস্তরে l এর মান 3 নেই, তাই ৩য় শক্তিস্তরে f অববিটাল সম্ভব নয়।   


১২। প্রঃ পরমাণুতে ইলেকট্রন সংখ্যার পরিবর্তন হলেও ভরের পরিবর্তন হয় না কেন?                  

উত্তরঃ কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টিকে ঐ পরমাণুর ভরসংখ্যা বলে। আবার, কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যাই হলো পারমাণবিক সংখ্যা যা একটি পরমাণুর নিজস্ব সত্তা বা তার পরিচয়। এ কারণে তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণুতে ধনাত্মক প্রোটন সংখ্যা ও ঋণাত্মক ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান থাকে। কিন্তু ইলেকট্রন সংখ্যার পরিবর্তন অর্থাৎ হ্রাস বা বৃদ্ধি হলে পরমাণু আর চার্জ নিরপেক্ষ থাকে না। উভয় ক্ষেত্রেই প্রোটন সংখ্যার পরিবর্তন না হওয়ায় মৌলের ভর পরিবর্তন হয় না। এ কারণেই পরমাণুতে ইলেকট্রন সংখ্যার পরিবর্তন হলেও ভরের কোনো পরিবর্তন হয় না।                                                                                                                    


১৩। প্রঃ পটাসিয়ামের 19 তম ইলেকট্রনটি 3d অরবিটালে না গিয়ে 4s অরবিটালে যায় কেন? 

উত্তরঃ আউফবাউ নীতি অনুসারে, ইলেকট্রন প্রথমে নিম্ন শক্তির অরবিটালে প্রবেশ করে এবং পরে পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তির অরবিটালে প্রবেশ করে। অর্থাৎ যে অরবিটালের শক্তি কম সেই অরবিটালে ইলেকট্রন আগে প্রবেশ করে এবং যে অরবিটালের শক্তি বেশি সেই অরবিটালে ইলেকট্রন পরে প্রবেশ করে। অরবিটালের মধ্যে কোনটির শক্তি কম আর কোনটির শক্তি বেশি তা অরবিটাল দুটির প্রধান শক্তিস্তরের মান (n) এবং উপশক্তিস্তরের মান (l) এর যোগফলের উপর নির্ভব করে। যে অরবিটালের (n+l) এর মান কম সেই অরবিটালের শক্তি কম এবং সেই অরবিটালে ইলেকট্রন আগে প্রবেশ করে। অপরদিকে যে অরবিটালের (n+l) এর মান বেশি সেই অরবিটালের শক্তিও বেশি এবং সেই অরবিটালে ইলেকট্রন পরে প্রবেশ করে।                                                                                      

এখন K এর ইলেকট্রন বিন্যাস – K(19) = 1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 3d0 4s1                                                      

এখনে 3d অরবিটালের জন্য n = 3 এবং l = 2, অতএব n+l এর মান 3 + 2 = 5                                  

আবার 4s অরবিটালের জন্য n= 4 এবং l = 0, অতএব n+l এর মান 4 + 0 = 4                                   

কাজেই 3d অরবিটালের চেয়ে 4s অরবিটালের শক্তি কম। তাই ইলেকট্রন প্রথমে 4s অরবিটালে এবং পরে 3d অরবিটালে প্রবেশ করে।                                                                                  

উল্লেখিত কারণে K এর 19তম ইলেকট্রনটি 3d অরবিটালে প্রবেশ না করে 4s অরবিটালে প্রবেশ করে।   


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.