SSC Physics Chapter 3: বল (সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর)
অধ্যায় - ৩ : বল (সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর)
জড়তা
(Inertia) কাকে বলে?
বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার
প্রবণতা বা সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে জড়তা বলে।
অথবা, বল প্রয়োগ না করা পর্যন্ত স্থির বস্তু যে স্থির থাকতে চায় কিংবা গতিশীল
বস্তু যে গতিশীল থাকতে চায়, বস্তুর এই বৈশিষ্ট্যকে জড়তা বলে।
গতি
জড়তা (Inertia of Motion) কী?
গতিশীল বস্তু চিরকাল গতিশীল থাকার বা থাকতে চাওয়ার প্রবণতাই
হলো গতি জড়তা। যেমন- গতি জড়তার কারণে চলন্ত বাস ট্রেন থেকে মানুষজনকে নামতে গিয়ে
আছাড় খেতে দেখি।
স্থিতি
জড়তা (Inertia of Rest) কী?
স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকার বা থাকতে চাওয়ার প্রবণতাই
হলো স্থিতি জড়তা।
যেমন -স্থির গাড়ি হঠাৎ চলতে শুরু করলে স্থিতি জড়তার কারণে
আমরা পেছনের দিকে একটা ঝাঁকুনি অনুভব করি।
বল
(Force) কাকে বলে?
যে বাহ্যিক কারণ বস্তুর স্থির বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন
ঘটায় বা ঘটাতে চায় তাকে বল বলে।
অথবা, যা স্থির
বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করার চেষ্টা করে বা যা গতিশীল বস্তুর
উপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করার চেষ্টা করে তাকে বল বলে।
নিউটনের
গতির প্রথম সূত্রটি (Newton’s 1st Law of Motion) লিখ।
বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু স্থির থাকবে এবং সমবেগে গতিশীল
বস্তু সমবেগে চলতে থাকবে।
নিউটনের
গতির দ্বিতীয় সূত্রটি (Newton’s 2nd Law of Motion) বিবৃত কর।
বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার তার উপর প্রযুক্ত বলের
সমানুপাতিক এবং যেদিকে বল প্রয়োগ করা হয় ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকে ঘটে।
নিউটনের
গতির তৃতীয় সূত্রটি (Newton’s 3rd Law of Motion) বিবৃত কর।
যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে তখন সেই
বস্তুটিও প্রথম বস্তুর ওপর বিপরীত দিকে সমান বল প্রয়োগ করে।
অথবা, প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া
আছে।
মৌলিক
বল (Fundamental Force) কাকে বলে?
যে সকল বল অন্য কোনো বল থেকে উৎপন্ন হয় না বা অন্য কোনো
বলের কোনো রূপ নয় বরং অন্যান্য বল এই সকল
বলের কোনো না কোনো রূপের প্রকাশ তাদেরকে মৌলিক বল বলে।
মৌলিক
বল কয়টি ও কি কি?
মৌলিক বল চারটি। যেমন- মহাকর্ষ বল, তড়িৎ চৌম্বকীয় বল,
দূর্বল নিউক্লীয় বল ও সবল নিউক্লীয় বল।
মহাকর্ষ
বল (Gravitational Force) কাকে বলে?
এই মহাবিশ্বে প্রত্যেক বস্তু একে অপরকে একটি বল দ্বারা
আকর্ষণ করে। মহাবিশ্বের যে কোনো দু’টি বস্তুর মধ্যকার এ পারষ্পরিক আকর্ষণ বলকে মহাকর্ষ
বা মহাকর্ষ বল বলে।
তাড়িতচৌম্বক
বল বা তড়িত চৌম্বকীয় বল (Electromagnetic Force) কাকে বলে?
দু’টি আহিত কণা বা বস্তু তাদের আধানের কারণে একে অপরের উপরে
যে বল প্রয়োগ করে তাকে তাড়িতচৌম্বক বা তড়িৎ চৌম্বকীয় বল বলে।
দূর্বল
নিউক্লীয় বল (Weak Nuclear Force) কী?
স্বল্প পাল্লার ও স্বল্প মানের যে বল নিউক্লিয়াসের
অভ্যন্তরস্থ মৌলিক কণাগুলোর মধ্যে ক্রিয়া করে তাই হলো দূর্বল নিউক্লীয় বল।
সবল
নিউক্লীয় বল (Strong Nuclear Force) কাকে বলে?
আমরা জানি, পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটন ও নিউট্রন
নামক দু’টি কণা আছে। এদেরকে একত্রে
নিউক্লীয়ন বলে। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভিতরে দু’টি নিউক্লীয়নের মধ্যে যে শক্তিশালী
বল কাজ করে তাকে সবল নিউক্লীয় বল বলে।
সাম্য
বল (Balanced Force) কাকে বলে?
কোন বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্ধি শূন্য
হয় অর্থাৎ বস্তুর কোনো ত্বরণ হয় না, তখন বস্তুটি সাম্যাবস্থায় থাকে। যে বলগুলো এই সাম্যাবস্থা সৃষ্টি করে
তাদেরকে সাম্য বল বলে।
অথবা, দুই বা ততোধিক বল একটি বস্তুর উপর প্রয়োগ করার পর বলগুলোর
সম্মিলিত লব্ধি শূন্য হলে অর্থাৎ বস্তুটি স্থির থাকলে ঐ বলগুলোকে সাম্য বল
বলে।
অসাম্য
বল বা সাম্যতাবিহীন বল (Unbalanced Force) কাকে বলে?
দুই বা ততোধিক বল একটি বস্তুর উপর প্রয়োগ করার পর বলগুলোর
সম্মিলিত লব্ধি শূন্য না হলে অর্থাৎ
বস্তুটি স্থির না থাকলে ঐ বলগুলোকে অসাম্য বল বা সাম্যতাবিহীন বল বলে।
ভরবেগ (Momentum) কী?
কোনো গতিশীল বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলই হলো ঐ বস্তুর ভরবেগ।
বলের
ঘাত (Impulse of Force) বা ঘাত কী?
প্রযুক্ত বল ও বলের ক্রিয়াকালের গুণফলকে বলের ঘাত বলে।
অনেক সময় একে শুধু ‘ঘাত’ নামে অভিহিত করা হয়।
নিউটন
(Newton) কী?
নিউটন হলো বলের একক।
যে পরিমান বল 1 kg ভরের
কোনো বস্তুর উপর ক্রিয়া করে 1m/s2
ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে 1 নিউটন (N) বল বলে।
ভরবেগের
সংরক্ষণ সূত্র (Law of Conservation of Momentum ) লিখ।
বাহির থেকে কোনো বল দেওয়া না হলে একাধিক বস্তুর সংঘর্ষের
আগের ভরবেগের সমষ্টি ও পরের ভরবেগের সমষ্টি সমান।
অথবা, একাধিক বস্তুর মধ্যে শুধু ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া ছাড়া
অন্য কোনো বল কাজ না করলে কোনো নির্দিষ্ট দিকে তাদের মোট ভরবেগের কোনো পরিবর্তন হয়
না।
ঘর্ষণ
(Friction) কী?
একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে একের উপর
দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে
যে বাধার উৎপত্তি হয় তাই হলো ঘর্ষণ।
ঘর্ষণ
বল (Frictional Force) কাকে বলে?
একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে একের উপর
দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে
একটি বাধার উৎপত্তি হয়। এই বাধাদানকারী বলকে ঘর্ষণ বল বলে।
স্থিতি
ঘর্ষণ (Static Friction) কী বা কাকে বলে?
দু’টি তলের একটি অপরটির সাপেক্ষে গতিশীল না হলে এদের মধ্যে
যে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয় তা হলো স্থিতি ঘর্ষণ।
অথবা, দু’টি বস্তু একে অন্যের সাপেক্ষে স্থির থাকা অবস্থায় যে
ঘর্ষণ সৃষ্টি হয় তাই হচ্ছে স্থিতি ঘর্ষণ।
অথবা, মেঝের উপর অবস্থিত একটি ভারী বস্তুকে টানার পর গতিশীল না
হলে যে ঘর্ষণ উৎপন্ন হয় তা হলো স্থিতি ঘর্ষণ।
অথবা, দু’টি স্থির বস্তু পরষ্পরের সংস্পর্শে থাকা অবস্থায়
একটিকে অপরটির উপর দিয়ে গতিশীল করার চেষ্টা করা হলে, এদের মধ্যে আপেক্ষিক গতি
সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে স্থিতি ঘর্ষণ বলে।
গতি
ঘর্ষণ বা পিছলানো ঘর্ষণ বা বিসর্প ঘর্ষণ (Sliding Friction) কী?
একটি বস্তুর সাপেক্ষে অন্য বস্তু যখন চলমান হয় তখন যে ঘর্ষণ
সৃষ্টি হয় তাই হচ্ছে গতি ঘর্ষণ বা পিছলানো ঘর্ষণ।
অথবা, যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর তথা তলের উপর দিয়ে
পিছলিয়ে বা ঘসে চলতে চেষ্টা করে বা চলে তখন যে ঘর্ষণের সৃষ্টি হয় তাকে গতি ঘর্ষণ
বা পিছলানো ঘর্ষণ বলে।
আবর্ত
ঘর্ষণ (Rolling Friction) কী বা কাকে বলে?
একটি তলের উপর যখন অন্য একটি বস্তু গড়িয়ে বা ঘুরতে ঘুরতে
চলে তখন যে ঘর্ষণ উৎপন্ন হয় সেটা হচ্ছে আবর্ত ঘর্ষণ।
অথবা, একটি বস্তু যখন অপর একটি তলের উপর দিয়ে গড়িয়ে চলে তখন
গতির বিরুদ্ধে যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করে তাকে
আবর্ত ঘর্ষণ বলে।
প্রবাহী
ঘর্ষণ (Fluid Friction) কী বা কাকে বলে?
যখন কোনো বস্তু তরল বা বায়বীয় পদার্থের ভেতর দিয়ে যায় তখন
সেটি যে ঘর্ষণ বল অনুভব করে সেটি হচ্ছে প্রবাহী ঘর্ষণ।
অথবা, যখন কোনো বস্তু যে কোনো প্রবাহী পদার্থ যেমন- তরল বা
বায়বীয় পদার্থের মধ্যে গতিশীল থাকে তখন যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করে তাকে প্রবাহী ঘর্ষণ
বলে।
কোন মন্তব্য নেই